Wormhole Theory in Bengali
মহাকাশ নিয়ে জানার ইচ্ছা আমাদের প্রাচীন কাল থেকেই . প্রাচীন কালের মানুস যখন রাতের অন্ধকার আকাশে তারা দেখতে পেত সেটিকে টাকা ভগবান এর ঘর মনে করত . বহু কাল এই ভাবেই চলার পর বিজ্ঞান এর আবির্ভাব ঘটে এই পৃথিবী তে . এর পর আমরা জানতে পারি আকাশের এই তারা গুলো র সম্মন্ধে . অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন সেগুলো হয়ত অন্য কোনো গ্রহ কারণ এই পৃথিবী কে একটি গ্রহ হিসাবে মনে করেছে বিজ্ঞান . এর পর বহু মানুস এর মনে প্রশ্ন জাগে আমাদের পৃথিবীর মতই কি তাহলে আরো গ্রহ আছে ? যেখানে আছে আমাদের মত মানুস . এই প্রশ্নের উত্তর খোজার জন্যই তৈরী হয় বহু টেলিস্কোপ .এবং আমরা জানতে পারি আমাদের মত আরো অনেক গ্রহ মহাকাশে আছে . কিন্তু এই গ্রহ গুলি আমাদের থেকে এতই দুরে যে আমরা আজকের দিনেও সেখানে যায়ার কথা ভাবতেও পারি না . এই গ্রহে পৌছানোর জন্য আলোর মত দ্রুত গতি সম্পন্ন মহাকাশযান দরকার .
কিন্তু আইনস্টাইন এর রিলেটিভিটি তত্ব অনুসারে যে বস্তূর ভর আছে সেই বস্তূ আলোর গতি তে চলতে পারে না . অর্থাত এই ধরনের মহাকাশযান বানানো অসম্ভব . তাহলে কি আমরা কোনো দিন সেই সমস্ত গ্রহে পৌছাতে পারব না ? কিন্তু, যদি আমরা সেই দূর এর গ্রহে যেতেই না পারি তাহলে বিজ্ঞানীরা কেন তাদের অত মূল্যবান সময় নষ্ট করছে . এর কারণ হলো গাণিতিক সমীকরণ , যা এমন ২ টি সম্ভাবনার সৃষ্টি করে যার সাহায্যে আমরা রেলাটিভিটি র তত্ব না ভেঙ্গে মহাকাশে আলোর গতিতে যাত্রা করতে পারব . এই দুই সম্ভাবনার মধ্যেই একটি হলো Warmhole . এবং অপরটি হল Warpdrive. আজ জানব Warmhole সম্মন্ধে .
ঊনবিংশ শতাব্দী শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির তত্ত্বকে কোন বিজ্ঞানী অস্বীকার করতে পারেনি . নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি তথ্য অনুসারে এই পৃথিবীর প্রত্যেক বস্তু পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে আকর্ষিত হয় . একে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বা মাধ্যাকর্ষণ বল বলা হয়. যে বস্তুর ওজন যত বেশি হবে সেই বস্তুর প্রতি মাধ্যাকর্ষণ বল তত বেশি হবে. কিন্তু নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির তত্ত্বে একটি বিশাল বড় অপূর্ণতা ছিল যার দিকে কোন বিজ্ঞানীর নজর পড়েনি.
নিউটন বলেছিল প্রত্যেক বস্তুকে পৃথিবী তার নিজের কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে কিন্তু এটি কেন হয় সেটি নিউটন ব্যাখ্যা করেননি. এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করেন অ্যালবার্ট আইনস্টাইন. 1915 সালে আইনস্টাইন নিজের General Relativity তথ্যের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন পৃথিবীর সব বস্তু পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে কেন আকর্ষিত হয়. তিনি বলেন Space Time বিকৃতির জন্য এটি হয় . এবার আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে স্পেস-টাইম আসলে কি. এটি নিয়ে আমরা পরের সপ্তাহে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব. আপনি শুধু মেনে চলুন Space টাইম একটি চাদর যার মধ্যে স্পেস এবং Time একসাথে জুড়ে আছে .আইনস্টাইন বলেন মহাকাশে প্রত্যেকটি বস্তু স্পেস-টাইম এ নিজের আকার অনুসারে তার বিকৃতি ঘটায় .যদি কোন বস্তুর আকার অনেক বর হয় তাহলে সেই বস্তুটি Space Time অনেক বেশি বিকৃতি ঘটাবে .
আপনি যদি একটি চাদরে দুটি গোলাকার বস্তু রাখেন তাহলে দেখবেন যে বর গোলাকার বস্তুটি চাদর টির বেশি বিকৃতি ঘটাবে এবং ছোট গোলাকার বস্তুটি বড় গোলাকার বস্তুর দিকে চলে আসবে. আইনস্টাইন এর মতে এই জিনিষটি কেই আমরা মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নামে জানি. Warmhole এর Concept স্পেস-টাইম এই বিকৃতি থেকেই এসেছে .আইনস্টাইনের সঙ্গী Nathan Rosen মনে করতেন এই Space Time এ বিকৃতির জন্যই একটি শর্টকাট রাস্তা তৈরি হয়.এই রাস্তা ব্রহ্মাণ্ডের শুধু মাত্র দুইটি কিনারা যুক্ত করে না এর সাথে যুক্ত করে দুটি সময়কাল কেও .
চলুন এবার এই জিনিষটি কে আমরা একটি উদাহরণের সাহায্যে সহযে জেনে নি. মনে করুন মহাকাশে A এবং B হল দুটি বিন্দু. সাধারণ নিয়ম অনুসারে A থেকে B তে যেতে আমাদের বহু বর্ষ সময় লাগবে. কিন্তু যদি Space Time এর মাধ্যমে A এবং B একটি ও Warmhole Er সাহায্য যুক্ত হয় তাহলে খুবই কম সময়ের মধ্যে আমরা A থেকে B বিন্দু তে পৌঁছতে পারব.
কিন্তু Warmhole ব্যবহার করা কি সম্ভব, চলুন আমরা জেনে নি. আইনস্টাইনের Mathematical নিয়ম অনুসারে Warmhole এর অস্তিত্ব থাকা উচিত. কিন্তু আজ পর্যন্ত Warmhole এর দেখা পাওয়া যায়নি .কিন্তু তাত্ত্বিক পদার্থবিদ John Wheeler এর Quantum Foam Hypothesis অনুসারে Warmhole ভার্চুয়াল কনার মতো সৃষ্টি এবং ধ্বংস হতে থাকে. ভার্চুয়াল কনা হল ব্রহ্মাণ্ডে অবস্থিত এমন কনা যেগুলি নিজে থেকে সৃষ্টি হয় এবং কিছুক্ষণ পরেই ধ্বংস হয়ে যায়. এই কণা কি করে সৃষ্টি হয়, কেন সৃষ্টি হয় এবং ধ্বংস বা কেন হয়ে যায় এর কারণ এখনো জানা সম্ভব হয়নি. John Wheeler এর মতে এই ব্রহ্মাণ্ডে Warmhole এর অস্তিত্ব আছে কিন্তু এটি এতটাই ক্ষুদ্র হয় যে তার সৃষ্টি হলে আমরা বুঝতে পারিনা. ওনার মতে একটি Wormhole এর Size হল 10–33 Centimeters.
চলুন কিছুক্ষণের জন্য আমরা মেনে মেনেনি Wormhole সৃষ্টি হলে আমরা সেটিকে ডিটেক্ট করে নিতে পারবো .কিন্তু সেটির মধ্যে দিয়ে যাত্রা করার জন্য আমাদের সেটির সাইজ বাড়াতে হবে.এটি করার জন্য আমাদের প্রয়োজন পড়বে Exotic ম্যাটারের. ব্রহ্মাণ্ডের যেকোনো সাধারন পদার্থের Energy Density এবং Pressure Positive হয়. কিন্তু Exotic Matter হলো এমন একটি ব্রহ্মাণ্ডের বস্তু যার Energy Density এবং Pressure Negative. অর্থাৎ এর সাহায্যে এমন একটি Matter তৈরি করা সম্ভব যার Energy Density Positive কিন্তু Pressure Negative কিংবা এর বিপরীত. Exotic Matter এর Negative Energy Density ব্যবহার করে Wormhole এর Size এতটাই বৃদ্ধি করা সম্ভব যার মধ্য দিয়ে একজন মানুষ কিংবা একটি মহাকাশযান খুবই সহজে যাত্রা করতে পারবে.
কিন্তু এখানে সমস্যা হল Exotic ম্যাটারের অস্তিত্ব শুধুমাত্র আমরা থিওরি তেই শুনেছি. এটি আসলে কিরকম দেখতে এবং কি করে তৈরি হয় তা আমরা জানি না. এবার চলুন একটু কল্পনা করেনি আমরা একটি Wormhole কে করতে ডিটেক্ট পেরেছি এবং Exotic Matter এর সাহায্যে সেটির আয়তন বৃদ্ধি করতে পেরেছি. কিন্তু Wholeman থিওরি অনুসারে যদি কেউ Wormhole এর ভেতরে প্রবেশ করে তাহলে সেটি সাথে সাথে ধ্বংস হয়ে যাবে অর্থাৎ মানুষ প্রবেশ করলে সে মারা যাবে .যদি আমরা ভবিষ্যতে কোনো উপায় Wormhole সৃষ্টি করে তার মাধ্যমে ব্রহ্মাণ্ডের অন্য কোন প্রান্তে পৌছাতে পারি তাহলেও একটি বড় সমস্যার সৃষ্টি হবে. Wormhole এর সাহায্যে ব্রহ্মাণ্ডের দুটি প্রান্ত যুক্ত করা সম্ভব কিংবা দুটি সময় কালকেও. কিন্তু Wormhole এর সাহায্যে আমরা যদি সেই সময়কার কিংবা ব্রহ্মাণ্ডের অন্য প্রান্তে পৌঁছে যাই তাহলে আমাদের গ্রহে ফিরে আসা খুবই কঠিন হবে. প্যারালাল ইউনিভার্সের বিশ্বাসী পদার্থবিজ্ঞানীরা মনে করেন Wormhole বিভিন্ন প্যারালাল ইউনিভার্স কে যুক্ত করে.
Davis নামক এক পদার্থবিজ্ঞানী একটি ল্যাব এ Exotic Matter তৈরি করার প্রচেষ্টায় লেগে আছেন. তার মতে একটি Wormhole তৈরি করার জন্য শুধুমাত্র দরকার Exotic Matter এর . এর থেকে বোঝা যায় ওনার পুরো বিশ্বাস Wormhole এর ব্যবহার সম্ভব . অন্য দিকে Michio Kaku র মতে যা গাণিতিক উপায়ে সম্ভব তা বাস্তবায়িত হওয়া সম্ভব . আমরা আজ সেই সমস্ত জিনিসকে অসম্ভব ভাবি কারণ সেগুলো সম্ভব করার মত প্রযুক্তি তৈরী হইনি . যেদিন সেই প্রযুক্তির আবির্ভাব হবে সেই দিন আজকের দিনের অসম্ভব কাজ গুলি করা সম্ভব হবে . Wormhole এর সাহায্যে সময় যাত্রা কথাটা সুনতে সহজ মনে হলেও তা খুব ই কঠিন কাজ .
No comments:
Post a Comment